টঙ্গিবাড়ীতে সরকারী সম্পত্তির মাটি কেটে বিক্রি ড্রেজার পাইপ গুড়িয়ে দিলেন এ্যাসিল্যান্ড
টঙ্গিবাড়ী প্রতিনিধি- মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ফজুশা এলাকায় সরকারী সম্পত্তির মাটি কেটে বিক্রি করার ঘটনায় ড্রেজারের ৪০টি পাইপ ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছেন টঙ্গিবাড়ী উপজেলা প্রশাসন। বুধবার বিকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে টঙ্গিবাড়ী সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ ওয়াজেদ ওয়াসীফ ওই স্থানের ড্রেজার পাইপগুলো ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন। এর আগে বিগত প্রায় ১৫ দিন যাবৎ আড়িয়ল ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি বাবুল হালদার ও ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সরকারী লাইসেন্স প্রাপ্ত কসাই আকলেছ সর্দার মিলে ফজুশাহ এলাকার বিল হতে সরকারী মাটি কেটে বিক্রি করছিলেন। খবর পেয়ে টঙ্গিবাড়ী সহকারী কমিশনার ভূমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ৪০টি ড্রেজার পাইপ ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন। বাবুল হালদার ও আকলেছ সর্দার বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দু-জনে মিলে বিভিন্ন ফসলি জমি কেটে ভরাট বানিজ্য শুরু করে। ক্ষমতার পট পরিবর্তণ হলে কিছুদিন নিরব থাকলেও এখোন পূনরায় আবার ফসলি জমি ভরাট বানিজ্য করছেন তারা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ফজুশাহ বাজারের স্কুলের পাশের বিস্তির্ণ কৃষি জমি ভরাট বানিজ্য চলছে। স্থাণীয়রা বলেন, ওই কৃষি জমিগুলো কিছুদিন আগে ক্রয় করেছে ওই এলাকার দুই প্রভাবশালী ব্যাক্তি । ওই জমিগুলো ভরাট করে আবাসন প্রকল্প তৈরি করে ওগুলো বিক্রি করবেন। স্থাণীয়রা আরো জানান, ইউপি সদস্য আকলেছ সর্দার ও আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল হালদার মিলে এই জমিতে মাটি ভরাট বানিজ্য চালাচ্ছেন। এই জমি ভরাট করতে গিয়ে ফজুসাঁ বিলের সরকারী সম্পত্তির মাটি লুট করছেন তারা দু-জন। স্থাণীয় আজিজুল দেওয়ান বলেন, আওয়ামী লীগ সময়ে ওই দুই ভূমিদশ্যূ বিভিন্ন ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছে এখোন ওরা দুজন মিলে সরকারী সম্পত্তির মাটি কাটছে। এ ব্যাপারে আকলেছ সর্দার বলেন, আমার মাংস কাটা ও মাটি কাটা দুটিরই লাইসেন্স রয়েছে । তবে সরকারী সম্পত্তির মাটি কাটার বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন সরকারী জমির মাটি কাটিনা। আমার শুধু ড্রেজার। এ ব্যাপারে ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি বাবুল হোসেনের কাছে মাটি কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে বাবুল হোসেন মাটি কাটার বিষয়ে কোন সদত্তুর না দিয়ে তিনি বারবার সংবাদিকদের সাথে দেখা করতে চান।
উল্লেখ্য আকলেছ মেম্বার টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ফজুশা বাজারের লাইসেন্স প্রাপ্ত গরু কাটার কসাই। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রভার খাটিয়ে মাটির ব্যাবসা শুরু করেন তিনি তার সাথে যোগ দেন ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি বাবুল হোসেন। প্রায় ৮ বছর যাবৎ বিভিন্ন ফসলি জমি ভরাট ও কর্তণ করে চলছে তারা। এছাড়া সরকারী খাল পুকুর নালা ভরাটের অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। উপজেলার ফজুশা , বসুউল্লাহ ও নিতিরা এলাকায় বেপোরোয়াভাবে চলছে তাদের একাধিক ড্রেজার। গত বছর বসুল্লাহ গ্রামের খাল ভরাট বসুউল্লাহ জামে মসজিদের পিছনে বিস্তির্ণ কৃষি জমি বসুউল্লাহ বিল হতে মাটি কেটে এনে ভরাট করেন তারা। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে আকলেস সর্দার সাংবাদিকদের “আমি কিন্তু যাতে কাসাই সাংবাদিকদের দেখে নিবো বলে হুমকি প্রদান করে।” জানা গেছে ইউপি সদস্য আকলেস সর্দার দীর্ঘদিন যাবৎ উপজেলার ফজুশাঁ বাজারে গরুর মাংস কেটে বিক্রি করে আসছে। বর্তমানেও ওই বাজারে তার গরুর মাংস কেটে বিক্রি করার ব্যবসা রয়েছে। বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত এই আকলেস সর্দার অর্থের জোড়ে গত ইউপি নির্বাচনে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। ইউপি সদস্য হওয়ার পরে আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি।